মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার ২ নং মনুমুখ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের আটজন ইউপি সদস্য।
অভিযোগকারীরা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদ ডিপ টিউবওয়েল দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়নের শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন, কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ডিপ টিউবওয়েল না দিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করে নিচ্ছেন। ইউপির মাসিক সভায় মেম্বাররা এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান গত ৩ মাস ধরে মাসিক সভা বন্ধ রেখেছেন। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত সরকারি, আধা-সরকারি (টিআর/কাবিখা) কাজে ১ শতাংশ, অন্যান্য প্রকল্পের কাজ না করে চেয়ারম্যান নিজে মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ইউপির জন্য বরাদ্দ অনুদানের টিআর, কাবিখা, হাটবাজার ও স্থানীয় সরকারের সকল বরাদ্দ, ইউপির আয়-ব্যয়ের হিসাব মেম্বারদের অবহিত না করা ও কাজ না করিয়ে নিজের ইচ্ছামতো বিল তুলে নেন। প্রতি মাসে টিসিবির মালামালের কিছু অংশ বিতরণ করে বাকি মালামাল নিজে বিক্রিসহ তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আসছেন। এসব বিষয়ে ইউপি সচিবও কোনো সদুত্তর দেন না।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের অনিয়মে ইউপি সচিবও সহযোগিতা করছেন। তবে ইউপি সচিব তার ওপর অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়নে টিসিবির মালামাল বিতরণ হচ্ছে শুনে আমিসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা ইউনিয়নে উপস্থিত হয়ে দেখি পুরো মালামাল ডিলারের কাছে নেই।
অবশিষ্ট মালামাল কোথায় জানতে চাইলে ডিলার বলেন, এগুলো চেয়ারম্যানের বিষয় আপনাদের জানার অধিকার নেই।
পরে বিষয়টি ইউপি সচিবকে অবগত করলে তিনি ইউনিয়নের অতিথি রুম থেকে ২ লিটার ওজনের ৩৬ বোতল সয়াবিন তেল, ২ কেজি ওজনের ৩৬ প্যাকেট ডাল ও কেজি ওজনের ৩৬ প্যাকেট চাল বের করে দেন। ডিলার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এ মালামাল অতিথি রুমে রেখেছেন।
মনুমুখ ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত, তাই কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।
জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম জানান উপরোক্ত বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ তাঁরা গ্রহণ করেছেন। তদন্তের পর সত্যতা পাওয়া গেলে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার কথা যোগ করেন মৌলভীবাজারের এই জেলা প্রশাসক।